সর্বশেষ

'সংসদ ভবনে যে কবর দেওয়া হয়েছে সেখানে জিয়ার কোনো লাশ নেই'

/ আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা /

প্রকাশ :


২৪খবরবিডি: 'আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। খুনি জিয়াউর রহমান যেভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে, সেও কিন্তু খুন হয়। তার লাশের কিন্তু কোনো খবর নাই। সংসদ ভবনে যে কবর দেওয়া হয়েছে সেখানে জিয়ার কোনো লাশ নেই। জেনারেল এরশাদ সেই কথা কিন্তু বলে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু বড় দেশ বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে একটি তাঁবেদার সরকার চায়।'
 

'গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, জেনারেল এরশাদ বলেছেন, জিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি। জিয়ার লাশ খালেদা বা তারেক বা কোকো বা পরিবার পরিজন কেউ দেখে নাই। তাহলে লাশ গেল কোথায়। তিনি বলেন, এরশাদ ধূর্ত লোক ছিল বলে একটি বাক্স এনে লোককে দেখানোর জন্য সংসদ ভবনে একটি অবৈধ স্থাপনায় কবর দিছে। সেখানে বিএনপি নেতা-কর্মী ফুল দেয়। কিন্তু কাকে ফুল দিচ্ছে সেটা কি তারা জানে? জানে না। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার-সদস্যদের হত্যা করে। বিমান বাহিনীর শত শত অফিসারদের হত্যা করেছে। হত্যা করে লাশ কারও কাছে দেয়নি, গুম করে ফেলেছিল জিয়াউর রহমান। এখনো তাদের পরিবার তার লাশ খুঁজে ফেরে কোথায় তাদের কবর। দেশের সংবিধান ও সেনা আইন লঙ্ঘন করে জিয়াউর রহমানের নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা এবং সেনাপ্রধান হিসেবে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে বিএনপি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হত্যাকাণ্ডটি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল বলে মনে হয়। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বিশ্বে যে সম্মান হয়েছিল ১৫ আগস্টের মাধ্যমে তা ধূলিসাৎ হয়ে যায়।' বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া জড়িত না থাকলে মোশতাক কখনো এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারত না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া যে জড়িত তা প্রমাণিত সত্য। কারণ ১৫ আগস্টের ঘটনার পরপরই সংবিধান লঙ্ঘন করে মোশতাক যেমন রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয় এবং জিয়াউর রহমান তাকে সমর্থন দেয়।' জিয়াউর রহমানকে মোশতাক সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে ঘোষণা দেয়। মোশতাককে হটিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। বেইমানদের স্থান বেশি দিন থাকে না। কাজেই সে ক্ষমতায় এসেই ওই ইনডেমনিটি আইনে পরিণত করার জন্য বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে খেলা শুরু হয়। আর হ্যাঁ না ভোট অর্থাৎ ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা জিয়াই শুরু করেছিল।'


'জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে ক্ষমতায় উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে কিছু লোক সৃষ্টি করে আর অনেককে চাপ সৃষ্টি করে একটি দল গঠন করে। সেই দলটিই হচ্ছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে বের করে তৈরি করা বিএনপি। বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আজকে আমার অবাক লাগে যখন বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনি। যাদের জন্মই হয়েছে হত্যা-ক্যু-যড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে, যাদের সৃষ্টিই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত থেকে, যাদের যাত্রা শুরু হয়েছে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মধ্য

'সংসদ ভবনে যে কবর দেওয়া হয়েছে সেখানে জিয়ার কোনো লাশ নেই'

দিয়ে কারচুপির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে; তাদের মুখে আর যাই হোক গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। তাদের আবার কিছু প্রভু আছে, তারা আবার একই সঙ্গে সুর মেলায় বাংলাদেশে এখন নাকি একেবারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতেই হবে। আমার প্রশ্ন সেইসব লোকদের কাছে বা সেই সব দেশের যারা এখন শুধু গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ায় বাংলাদেশে, যখন জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মার্শাল ল’ জারি করে ক্ষমতা দখল করেছিল বা যখন এরশাদ মার্শাল ল’ জারি করে ক্ষমতা দখল করেছিল, আমরা যখন আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি কই তাদের তো সেই চেতনা দেখি নাই।'
 

'তখন তো তাদের কথা শুনিনি। আজকে নির্বাচন সুষ্ঠু চায়। বেশি দূর যেতে হবে না। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার নির্বাচন তো আমরা দেখেছি। জিয়াউর রহমানের তিনটা আর বিএনপির চারটা নির্বাচন। অর্থাৎ হ্যাঁ না ভোট, রাষ্ট্রপতি, তারপর হলো সংসদ নির্বাচন ’৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ’৭৯ সালে দিল সংসদ নির্বাচন আবার ’৮১ সালে জিয়ার মৃত্যুর পর তখনো বিএনপি ক্ষমতায়, ছাত্তার সাহেবকে প্রার্থী করা হয়েছিল। এসব নির্বাচনে কীভাবে ভোট কারচুপি করে সেটা তো আমরা দেখেছি। আজকে যারা বাংলাদেশে টর্চলাইট দিয়ে নির্বাচন খুঁজছেন, তাদের দৃষ্টি শক্তি কোথায় ছিল। তিনি বলেন, ৮৬ সালে আমরা নির্বাচনে গেলাম। ৪৮ ঘণ্টা পর রেজাল্ট দিল। তখন তো তাদের সোচ্চার দেখিনি। বরং মিলিটারি ডিক্টেটরদের কেন আমরা সমর্থন দেই না, সেই কথাই তারা আমাদের বলেছে। আমরা কেন সমর্থন দেব। আইয়ুব খান থেকে জিয়া, এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। আজকে শুনতে হয় আমাদের হাতে নাকি গণতন্ত্র সুরক্ষিত নয়। গণতন্ত্র সুরক্ষিত মিলিটারি ডিক্টেটর, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী আর চুরি ডাকাতি করে মানি লন্ডারিং করে যাদেরকে জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে বিতাড়িত করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, একটা মানুষ কতটা অমানবিক হলে একটা শোক দিবসকে জন্মদিন বানিয়ে দিয়ে সেই উৎসব পালন করতে পারে। একটু চিন্তা করে দেখবেন। কতটা অমানবিক। আমাদের অনেকেরই ১৫ আগস্ট জন্মদিন, কেউ তো পালন করে না। খালেদা জিয়া পালন করে। হঠাৎ করেই জানলাম তার জন্মদিন ১৫ আগস্ট। মানুষ এদিন শোক পালন করে আর তারা বানানো জন্মদিন পালন করে। কতটা অমানবিক। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ। আলোচনা সভায় পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির।'

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত